চীনের পূর্ব তুর্কিস্তানের বারেন টাউনশিপে উইঘুর মুসলমানদের উপর সরকারি বাহিনীর অত্যাচার ও নৃশংসতার প্রতিবাদে বিবিএসএস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের উদ...
চীনের পূর্ব তুর্কিস্তানের বারেন টাউনশিপে উইঘুর মুসলমানদের উপর সরকারি বাহিনীর অত্যাচার ও নৃশংসতার প্রতিবাদে বিবিএসএস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের উদ্যোগে চিত্র প্রদর্শনী ও প্রতিবাদ সভা পালন করা হয়েছে।
আজ ০৫ এপ্রিল ২০২২ রোজ মঙ্গলবার সকাল ১০ ঘটিকায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সংক্ষিপ্ত চিত্র প্রদর্শনী ও প্রতিবাদ সভার কর্মসূচি পালন করেছে।
প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তৌফিক আহমেদ তফছির। উক্ত কর্মসূচিতে সংগঠনের মহসচিব ও গাজী টিভির প্রযোজক শফিকুল ইসলামের পরিচালনায় সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা এমদাদুল হক ছালেক, বাংলাদেশ জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা মহিউদ্দিন,বিশিষ্ট সাংবাদিক মুস্তাফিজুর রহমান , জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা নাসির উদ্দিন মুন্সী, যুব সংগঠক এম এইস মিল্টন প্রমুখ।
সভাপতির সমাপনী বক্তৃতায় তৌফিক আহমেদ তফছির বলেন, ১৯৯০ সালের ০৫ এপ্রিল
বারেন টাউনশিপ দাঙ্গা ছিল চীনা সরকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে উইঘের মুসলমানদের একটি বিদ্রোহ এবং সশস্ত্র সংঘাত যা শুরু হয়েছিল ০৫ এপ্রিল ১৯৯০। পূর্ব তুর্কিস্তানের আক্তো কাউন্টির বারেন শহরে ২০০ জন উইঘুর পুরুষ এই বিদ্রোহের সূচনা করেছিলেন। ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টির নেতা জেইদিন ইউসুপ বারেন টাউনশিপের স্থানীয় উইঘুর মুসলমানদেরকে চীনা নিপীড়নের বিরুদ্ধে জেগে উঠতে এবং একটি স্বাধীন উইঘুর ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করার আহ্বান জানান। জবাবে, চীনা বাহিনী তিন দিন ধরে বলপ্রয়োগ করে বিদ্রোহ দমন করে।
জেইদিন ইউসুপের নেতৃত্বে ২০০ জন লোকের বিক্ষোভ, স্থানীয় সরকার অফিসে মিছিল করে এবং জিনজিয়াংয়ে হান চীনাদের গণ অভিবাসন বন্ধের দাবি জানায়। চীন সরকার কর্তৃক স্থানীয় উইঘুর মহিলাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া ২৫০ জোরপূর্বক গর্ভপাত এবং স্থানীয় উইঘুরদের একটি মসজিদ নির্মাণের অনুমতি না দেওয়ার ফলে এই বিক্ষোভ ছিল।
চীনা সরকার প্রথমে সশস্ত্র পুলিশের একটি বিচ্ছিন্ন দল পাঠায় গোলযোগের জায়গায়। উইঘুর মুসলিম জনসংখ্যা এবং কর্তৃপক্ষের মধ্যে লড়াই শুরু হয় এবং সহিংসতা শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। কয়েকদিন ধরে চলা এই বিদ্রোহের অবসান ঘটে যখন চীন সরকার দাঙ্গা দমন করতে শত শত ভারী সশস্ত্র পুলিশ ও সৈন্য পাঠায়।
১০ এপ্রিল, ১৯৯০-এ সংঘর্ষের সমাপ্তি ঘটে, মোট ২৩ জন নিহত, ২১ জন আহত এবং ২৩২ উইঘুর যোদ্ধাকে বন্দী করা হয়। অন্য একটি সূত্র বলেছে যে সশস্ত্র সংঘাতের সময় ১৬০০ উইঘুর মুসলিম নিহত হয়েছে। জুলাই ১৯৯০ সালে জিনজিয়াং-এ চীনা সরকার “উইঘুর মুসলিম জাতিগত বিভাজনবাদী এবং অন্যান্য অপরাধী অপরাধীদের অপরাধমূলক কার্যকলাপ” উল্লেখ করে ৭,৯০০ উইঘুর মুসলমানদের গ্রেপ্তারের ঘোষণা দেয়। কারণ হিসাবে। বেসামরিক হতাহতের একটি অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট অনুপস্থিত।
যদিও, চীনা সরকারী বাহিনী নৃশংসভাবে বারেন বিপ্লবকে চূর্ণ করেছিল কিন্তু এটি পূর্ব তুর্কিস্তানের মুসলিম জনসংখ্যাকে জাগ্রত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এটি বিশ্বকে দেখিয়েছিল যে পূর্ব তুর্কিস্তানের মুসলিম জনগণের আত্মা মরেনি। আমার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে আমরা পূর্ব তুর্কিস্তানের জনগণের সাথে বাংলাদেশের মুসলমানরা চীনের সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে রক্ষা ও লড়াই করতে দাঁড়াবো।এদিকে আজকের উইঘুর দিবস উপলক্ষে রাজধানীর যিশটি পয়েন্ট থেকে প্রতিবাদি ফেইসবুক লাইভ করেন সংগঠনের সদস্যরা।