মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল থেকে-ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর গ্রামে তিতাস নদীর পূর্বপ্রান্তে হরিপুর ( জমিদার বাড়ি ) কালের সাক্...
কথিত আছে ১৭৫ বছর পূর্বে জমিদার গৌরী প্রসাদ রায় চৌধুরী এবং কৃষ্ণ প্রসাদ রায় চৌধুরী বাড়িটি নির্মাণ করেন। হরিপুর ইউনিয়নে অবস্থিত প্রাসাদটি ।
জমিদার কৃষ্ণপ্রসাদ রায় চৌধুরী কর্তৃক ১৮৭০খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়েছিল। প্রায় ৪৮০ শতাংশ জমির উপর নির্মিত বাড়িটিতে ৬০টি রয়েছে
কক্ষ।
এ বাড়িটিকে কেউ বলে রাজবাড়ি , বড়বাড়ি আবার কেউ বলে জমিদার বাড়ি। বর্তমানে প্রত্নত্ব
বিভাগের অধিনে রয়েছে ।প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অনেক লোক আসে বাড়িটি দেখতে।
দুই গম্বুজের তিনতলা সুবিশাল বাড়িটি। বাড়িটির পূর্ব পাশে রয়েছে
নাসিরনগর-মাধবপুর সড়ক।বাড়ির বাইরে থেকে কিছুই বোঝার উপায় নেই। অনেক বড় বারান্দা ডিঙিয়ে মূল বাড়ি।
নান্দনিক স্থাপত্য শৈলিতে নির্মিত বাড়িটি সরেজমিনে দেখা যায়,বাড়ির বাইরের
সৌন্দয অবিকল রয়ে গেছে। সব কয়টি কক্ষেরই পুরানো সেই দরজা নেই।
বর্তমানে বসবাসকারীরা সাধারণ মানের দরজা লাগিয়ে বসবাস করছে। সব মিলিয়ে ৩০ টি পরিবার রয়েছে এখানে। গত
১০ থেকে ৭০ বছর ধরে তারা এখনে
বসবাস করছেন।
জানা যায়, প্রায় ১৭৫ বছর পূর্বে জমিদার গৌরী প্রসাদ রায় চৌধুরী ও কৃষ্ণ প্রসাদ রায় চৌধুরী বাড়িটি নিমার্ণ করেন। বৃটিশ আমলে নির্মিত বাড়িটির নিমার্ণ শৈলী বড়ই মনোরম।
১৩৪৩ বাংলার ১২ চৈত্র কৃষ্ণ প্রসাদ রায় চৌধুরীর মূত্যুর পর বাড়িটির উত্তরাধিকারী হন হরিপদ রায় চৌধুরী ও শান্তি রায় চৌধুরী। কালক্রমে ১৯৪৭ সালে দেশ বিভক্ত হওযার পর জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ হলে তারা বাড়িটি ফেলে কলকাতায় চলে যায়।
লোকমুখে
শোনাযায় , তিতাসের পূর্বপ্রান্তে এত বড় বাড়ি আর কোথাও নেই। প্রায় ৪৮০ শতাংশ জমির উপর র্নিমিত তিনতলা জমিদার বাড়িটিতে প্রায় ৬০টি কক্ষ রয়েছে।
যেমন- রং মহল, দরবার হল,ধানের গোলা, গোয়ালঘর, রান্নার ঘর, নাচ ঘর, মল পুকুর, খেলার মাঠ, মন্দির ও সীমানা প্রাচীর ।
বিশাল আয়তনের বাড়িটির পুরো ভবনের কোথাও কোন রডের গাঁথুনি নেই। ইট সুরকির গাঁথুনি দিয়েই তৈরি ভবনটি। দুপাশে দুটি সুউচ্চ গম্বুজ স্বগর্বে মাথা তুলে দাড়িঁয়ে আছে।বাড়িটিতে দোতলায় উঠার ৬টি সিড়িঁ ও তিন তলায় উঠার ২টি সিড়ি রয়েছে। বাড়িটির পশ্চিম-উত্তর কোণে রয়েছে
৬টি শোবার কক্ষ । পুকুরের পূর্বপাড়ে ৪টি ও পশ্চিম পাড়ে ৪টি শোবার
কক্ষ রয়েছে। বাড়ির পশ্চিম দিকে তিতাস নদীর পাড়ে পাকা ঘাটলার উত্তর দিকে কৃষ্ণ প্রসাদ রায় চৌধুরী ও দক্ষিণ দিকে গৌরী প্রসাদ রায় চৌধুরীর সমাধি মঠ রয়েছে ।
বাড়িটি দেখার জন্য এখনও দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসেন। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে তিতাসে যখন পানি থৈ থৈ করে তখন বাড়িটির সৌন্দর্য অনেকগুন বেড়ে যায়।
এক সময়ে ঐতিহ্যবাহি নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা হরিপুর জমিদার বাড়ির নদীর ঘাট থেকেই শুরু হত। এ বাড়িতে ‘দি লাস্ট ঠাকুর’ ‘‘মধুমালতি’’‘‘ঘেটু পুত্র কমলা’’নাইওরীসহ অনেক ছবি চিত্রায়িত হয়েছে।